মানুষ কবিতা-কাজী নজরুল ইসলাম | Manus Bangla kobita lyrics By Kazi Nazrul Islam
কবিতা আমাদের না বলা কথাগুলিকে প্রকাশ করার একটি বিশেষ মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। এই মানুষ কবিতাটির লিরিক্স কবিতাটির মাধ্যমেও সেই একই বিষয়ের উল্লেখ পাওয়া গেছে।
কবি তাঁর এই মানুষ কবিতাটির লিরিক্স কবিতাটির মাধ্যমে আমাদের কে তাঁর মনের গহীন ভাবনার উল্লেখ করে আমাদের সামনে তাঁর বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন । আমরাও সেই একই রকমের উপলব্ধি পেয়ে থাকি কবির সেই মানুষ কবিতাটির লিরিক্স কবিতার প্রতিটি লাইন থেকে।
আমরা মানুষ, আমরা এই সমাজে বসবাস করে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করি, কিন্তু আমরাই আবার সেই প্রকৃতির ধবংস করে থাকি, কবি তাঁর এই মানুষ কবিতাটির লিরিক্স কবিতাটির মাধ্যমে মানুষের অমানবিক ক্রিয়াকলাপ কে বাক্ত করেছেন।
কবির এই মানুষ কবিতাটির লিরিক্স কবিতাটি হাজার হাজার মানুষের মনে দাগ কাটতে সক্ষম হয়েছে এর বিশেষ কারন হল এই মানুষ কবিতাটির লিরিক্স কবিতাটির অসাধারন বাচন ভঙ্গি। কবি তাঁর কবিত্ব ভাব কে অসাধারন ভাবে প্রস্ফুটিত করেছেন তাঁর এই মানুষ কবিতাটির লিরিক্স কবিতাটির মাধ্যমে।
এই মানুষ কবিতাটির লিরিক্স কবিতাটি শুধুই ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, মিজরাম, মনিপুর এর মধ্যেই সীমাবন্ধ নেই ,
কিংবা কবির এই মানুষ কবিতাটির লিরিক্স কবিতাটি বাংলাদেশের মধ্যেই আটকে নেই। এই মানুষ কবিতাটির লিরিক্স কবিতাটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ।
বিশ্বের যেসব দেশে বিশেষ করে যেসব দেশে বাঙালি প্রবাসী-রা রয়েছেন যেমন- সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া , কাতার, কুয়েত, সৌদিআরব, নেপাল, ভুটান, মায়ানমার, ইত্যাদি দেশেও মানুষ কবিতাটির লিরিক্স কবিতাটি সমান ভাবে জনপ্রিয়।
মানুষ কবিতাটির লিরিক্স বা লিরিক
গাহি সাম্যের গান-
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান,
নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্মজাতি,
সব দেশে, সব কালে, ঘরে-ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।
‘পূজারী, দুয়ার খোলো,
ক্ষুদার ঠাকুর দাঁড়ায়ে দুয়ারে পূজার সময় হ’ল!’
স্বপন দেখিয়া আকুল পূজারী খুলিল ভজনালয়
দেবতার বরে আজ রাজা-টাজা হ’য়ে যাবে নিশ্চয়!
জীর্ণ-বস্ত্র শীর্ণ-গাত্র, ক্ষুদায় কন্ঠ ক্ষীণ
ডাকিল পান্থ, ‘দ্বার খোল বাবা, খাইনি ক’ সাত দিন!’
সহসা বন্ধ হ’ল মন্দির, ভুখারী ফিরিয়া চলে,
তিমির রাত্রি, পথ জুড়ে তার ক্ষুদার মানিক জ্বলে!
ভুখারী ফুকারি’ কয়,
‘ঐ মন্দির পূজারীর, হায় দেবতা, তোমার নয়!’
মসজিদে কাল শিরনী আছিল, অঢেল গোস্ত-রুটি
বাঁচিয়া গিয়াছে, মোল্লা সাহেব হেসে তাই কুটিকুটি!
এমন সময় এলো মুসাফির গায়ে আজারির চিন্
বলে ‘বাবা, আমি ভুকা-ফাকা আছি আজ নিয়ে সাত দিন!’
তেরিয়া হইয়া হাঁকিল মোল্লা – ‘ভ্যালা হ’ল দেখি লেঠা,
ভুখা আছ মর গো-ভাগাড়ে গিয়ে! নামাজ পড়িস বেটা?’
ভুখারী কহিল, ‘না বাবা!’ মোল্লা হাঁকিল – ‘তা হলে শালা
সোজা পথ দেখ!’ গোস্ত-রুটি নিয়া মসজিদে দিল তালা!
ভুখারী ফিরিয়া চলে,
চলিতে চলিতে বলে-
‘আশিটা বছর কেটে গেল, আমি ডাকিনি তোমায় কভু,
আমার ক্ষুদার অন্ন তা’বলে বন্ধ করনি প্রভু
তব মসজিদ মন্দিরে প্রভু নাই মানুষের দাবী,
মোল্লা-পুরুত লাগায়েছে তার সকল দুয়ারে চাবী!’
কোথা চেঙ্গিস্, গজনী-মামুদ, কোথায় কালাপাহাড়?
ভেঙে ফেল ঐ ভজনালয়ের যত তালা-দেওয়া-দ্বার!
খোদার ঘরে কে কপাট লাগায়, কে দেয় সেখানে তালা?
সব দ্বার এর খোলা রবে, চালা হাতুড়ি শাবল চালা!
হায় রে ভজনালয়,
তোমার মিনারে চড়িয়া ভন্ড গাহে স্বার্থের জয়!
মানুষেরে ঘৃণা করি’
ও’ কারা কোরান, বেদ, বাইবেল চুম্বিছে মরি’ মরি’
ও’ মুখ হইতে কেতাব গ্রন্থ নাও জোর ক’রে কেড়ে,
যাহারা আনিল গ্রন্থ-কেতাব সেই মানুষেরে মেরে,
পূজিছে গ্রন’ ভন্ডের দল! মূর্খরা সব শোনো,
মানুষ এনেছে গ্রন্থ;-গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোনো।
আদম দাউদ ঈসা মুসা ইব্রাহিম মোহাম্মাদ
কৃষ্ণ বুদ্ধ নানক কবীর,-বিশ্বের সম্পদ,
আমাদেরি এঁরা পিতা-পিতামহ, এই আমাদের মাঝে
তাঁদেরি রক্ত কম-বেশী ক’রে প্রতি ধমনীতে রাজে!
আমরা তাঁদেরি সন্তান, জ্ঞাতি, তাঁদেরি মতন দেহ,
কে জানে কখন মোরাও অমনি হয়ে যেতে পারি কেহ।
হেসো না বন্ধু! আমার আমি সে কত অতল অসীম,
আমিই কি জানি-কে জানে কে আছে আমাতে মহামহিম।
হয়ত আমাতে আসিছে কল্কি, তোমাতে মেহেদী ঈসা,
কে জানে কাহার অন্ত ও আদি, কে পায় কাহার দিশা?
কাহারে করিছ ঘৃণা তুমি ভাই, কাহারে মারিছ লাথি?
হয়ত উহারই বুকে ভগবান্ জাগিছেন দিবা-রাতি!
অথবা হয়ত কিছুই নহে সে, মহান্ উচ্চ নহে,
আছে ক্লেদাক্ত ক্ষত-বিক্ষত পড়িয়া দুঃখ-দহে,
তবু জগতের যত পবিত্র গ্রন্থ ভজনালয়
ঐ একখানি ক্ষুদ্র দেহের সম পবিত্র নয়!
হয়ত ইহারি ঔরসে ভাই ইহারই কুটীর-বাসে
জন্মিছে কেহ- জোড়া নাই যার জগতের ইতিহাসে!
যে বাণী আজিও শোনেনি জগৎ, যে মহাশক্তিধরে
আজিও বিশ্ব দেখনি,-হয়ত আসিছে সে এরই ঘরে!
ও কে? চন্ডাল? চম্কাও কেন? নহে ও ঘৃণ্য জীব!
ওই হ’তে পারে হরিশচন্দ্র, ওই শ্মশানের শিব।
আজ চন্ডাল, কাল হ’তে পারে মহাযোগী-সম্রাট,
তুমি কাল তারে অর্ঘ্য দানিবে, করিবে নান্দী-পাঠ।
রাখাল বলিয়া কারে করো হেলা, ও-হেলা কাহারে বাজে!
হয়ত গোপনে ব্রজের গোপাল এসেছে রাখাল সাজে!
চাষা ব’লে কর ঘৃণা!
দে’খো চাষা-রূপে লুকায়ে জনক বলরাম এলো কি না!
যত নবী ছিল মেষের রাখাল, তারাও ধরিল হাল,
তারাই আনিল অমর বাণী-যা আছে র’বে চিরকাল।
দ্বারে গালি খেয়ে ফিরে যায় নিতি ভিখারী ও ভিখারিনী,
তারি মাঝে কবে এলো ভোলা-নাথ গিরিজায়া, তা কি চিনি!
তোমার ভোগের হ্রাস হয় পাছে ভিক্ষা-মুষ্টি দিলে,
দ্বারী দিয়ে তাই মার দিয়ে তুমি দেবতারে খেদাইলে।
সে মার রহিল জমা-
কে জানে তোমায় লাঞ্ছিতা দেবী করিয়াছে কিনা ক্ষমা!
বন্ধু, তোমার বুক-ভরা লোভ, দু’চোখে স্বার্থ-ঠুলি,
নতুবা দেখিতে, তোমারে সেবিতে দেবতা হ’য়েছে কুলি।
মানুষের বুকে যেটুকু দেবতা, বেদনা-মথিত সুধা,
তাই লুটে তুমি খাবে পশু? তুমি তা দিয়ে মিটাবে ক্ষুধা?
তোমার ক্ষুধার আহার তোমার মন্দোদরীই জানে
তোমার মৃত্যু-বাণ আছে তব প্রাসাদের কোন্খানে!
তোমারি কামনা-রাণী
যুগে যুগে পশু, ফেলেছে তোমায় মৃত্যু-বিবরে টানি’।
কবির এই অসামান্য লেখনীর জন্য বিশেষ করে Manus Bangla kobita lyrics এই কবিতাটি লেখার কারনে জাতি কবিকে মনের গহীনে স্থান দিয়েছেন। কবির এই অসাধারন লেখনীর কারনে জাতির মনে তাঁর নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখিত থাকবে।
আমরা বিশেষ করে কবির এই Manus Bangla kobita lyrics কবিতাটির জন্য তাঁর কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আপনাদের কাছে অনুরোধ আপনারাও কবির জন্য স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করবেন, যাতে এই Manus Bangla kobita lyrics কবিতাটি লেখার জন্য তাঁকে উত্তম প্রতিদান প্রদান করেন।
যদি আপনাদের কাছে Manus Bangla kobita lyrics এই কবিতাটি ভালো লাগে, তাহলে আপনারা আপনাদের প্রিয়জন দের সাথে এই Manus Bangla kobita lyrics কবিতাটি শেয়ার করুন।
আর আপনারা যদি এই Manus Bangla kobita lyrics এর মতো কবিতা পেতে চান তবে আমাদের এই ওয়েবসাইট-টি কে অনুসরণ করতে পারেন। আমাদের ফেসবুক পেজ , আমাদের ইউটিউব চ্যানেল টিকে ও সাবস্ক্রাইব করতে পারেন।
পরবর্তীতে আপনারা কোন বিষয়ের উপরে কবিতা চান তা আমাদেরকে কমেন্ট করুন , আমরা যথা সম্ভব আপনাদের পছন্দ মতো কবিতা আপনাদের সামনে উপস্থিত করার চেষ্টা করবো।
কাজী নজরুল ইসলাম-এর জীবনী পড়তে লেখাতে ক্লিক করুন
0 মন্তব্যসমূহ